Bimaristan
Bengali blogs, Articles & poetry by Akanjee,  ইতিহাস

বিজ্ঞান ও চিকিৎসায় বাগদাদের অগ্রগতি: আল-রাজির অসাধারণ সিদ্ধান্ত

বিজ্ঞান ও চিকিৎসায় বাগদাদের অগ্রগতি: আল-রাজির অসাধারণ সিদ্ধান্ত

৯ম শতকে বাগদাদ ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত শহরগুলোর একটি, বিশেষ করে বিজ্ঞান ও চিকিৎসায়। সেই সময়ের অন্যতম খ্যাতনামা পারস্য বিজ্ঞানী ও চিকিৎসক ছিলেন আল-রাজি। তিনি শহরে একটি নতুন হাসপাতালের জন্য সঠিক জায়গা বাছাইয়ের দায়িত্ব পান। সে সময় হাসপাতাল, যাকে বিমারিস্তান বলা হতো, শুধুমাত্র রোগীদের চিকিৎসার স্থানই ছিল না; এটি ছিল গবেষণা ও শিক্ষার কেন্দ্রও।

এক নতুন চিন্তার পথিকৃৎ

আল-রাজি ছিলেন ব্যবহারিক জ্ঞান ও নতুন চিন্তার পথিকৃৎ। তিনি এমন একটি জায়গা খুঁজতে চাইলেন, যেখানে রোগীরা সবচেয়ে সুস্থ থাকতে পারবে। এর জন্য তিনি বাগদাদের বিভিন্ন জায়গায় মাংসের টুকরা ঝুলিয়ে রাখলেন এবং পর্যবেক্ষণ করলেন, কোথায় মাংস সবচেয়ে ধীরে পচে। যেখানে মাংসের পচন সবচেয়ে কম হলো, সেটিই হাসপাতালের জন্য বেছে নেওয়া হলো। তার যুক্তি ছিল— যেখানে মাংস কম পচে, সেখানকার বাতাস পরিষ্কার এবং রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর।

প্রকৃতির সঙ্গে বিজ্ঞানের সংযোগ

আজকের দিনে এটি অদ্ভুত মনে হতে পারে, তবে রাজির এই পদ্ধতি প্রমাণ করে যে তিনি তখনই বায়ুর গুণগত মান ও পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব বুঝেছিলেন। যা পরবর্তীকালে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে। তার এই অভিনব চিন্তাভাবনা শুধুমাত্র চিকিৎসা ক্ষেত্রে নয়, পরিবেশ বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য সচেতনতার ক্ষেত্রেও যুগান্তকারী অবদান রেখেছে।

আল-রাজির মতো বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে, প্রকৃতির সঙ্গে বিজ্ঞান ও যুক্তির সমন্বয় করলে চমৎকার ফলাফল পাওয়া সম্ভব। আজ আমরা যখন হাসপাতাল নির্মাণের স্থান নির্ধারণে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করি, তখন এই ঐতিহাসিক কৌশলের কথা মনে রাখা উচিত, যা একসময় আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.